11 January 2021

সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালেদুর রহমান টিটো আর নেই

 লোটাস আহমেদ শুভ,যশোর প্রতিনিধি -



বর্ষীয়ান রাজনীতিক সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী খালেদুর রহমান টিটো (৭৬) মৃত্যুবরণ করেছেন 

(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) 

আজ রবিবার দুপুর ১টা ২০ মিনিটে যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে সকাল দশটার দিকে শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়ে উঠলে টিটোকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। মৃত্যুকালে তিনি তিন ছেলে রেখে গিয়েছেন। ২০০৭ সালে তাঁর স্ত্রী রওশন মারা যান।

তার মেজ ছেলে অ্যাডভোকেট খালিদ হাসান জিউস জানান, ফুসফুসে ইনফেকশনজনিত কারণে তিনদিন আগে তাঁকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ সকাল দশটার দিকে অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

খালেদুর রহমান টিটো ১৯৪৫ সালের ১ মার্চ কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম অ্যাডভোকেট হবিবুর রহমান। তিনি একজন এমএ, বিএল ছিলেন। মা মরহুম করিমা খাতুন একজন এমএ, এম-এড ছিলেন। সাত ভাইবোনের মধ্যে টিটো দ্বিতীয়। বড়ভাই মাসুকুর রহমান তোজো ১৯৭১ সালে রাজাকার বাহিনীর হাতে নৃশংসভাবে খুন হন।

খালেদুর রহমান টিটোর শিক্ষাজীবন শুরু হয় যশোর জিলা স্কুলে। ১৯৬০ সালে এখান থেকে তিনি ম্যাট্রিক পাশ করেন। ১৯৬৩ সালে ঢাকার কায়েদে আজম কলেজ হতে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। ১৯৬৭ সালে কারাগারে অবস্থানকালে যশোর এমএম কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন করেন। পরবর্তীতে মাস্টার্স করতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে ভর্তি হয়েও রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে মাস্টার্স আর শেষ করা সম্ভব হয়নি।

খালেদুর রহমান টিটো রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে উঠেছেন। ১৯৬৩ সালে যশোর এমএম কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে যশোর সদর আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। তবে এর আগে তিনি অনেক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন।

১৯৯০ সালের মে মাসে এরশাদ সরকারের শ্রম ও জনশক্তি প্রতিমন্ত্রী হন তিনি। এছাড়া ইপিসিপি (এমএল), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী-ন্যাপ), গণতান্ত্রিক পার্টি, জাতীয় পার্টি, বিএনপি এবং আওয়ামী লীগও করেছেন তিনি।

১৯৭৪ সাল থেকে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী-ন্যাপ) করা এ নেতা ১৯৭৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ন্যাপের পক্ষ থেকে জিয়াউর রহমানকে সমর্থন দিয়েছিলেন। পরে ১৯৮১ সালে ‘গণতান্ত্রিক পার্টি’ গঠিত হলে এর স্টান্ডিং কমিটির সদস্য হন।

১৯৮৪ সালে যশোর পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে ৮৬ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৮৭ সালে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েওছিলেন।

জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্বপ্রাপ্ত এ নেতা ৯৬ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর দল ত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দেন। পরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং ২০০৮ সালে এমপি হন।


শেয়ার করুন